প্রথমে পুরুষদের উ’ল’ঙ্গ করে ছবি তুলতেন মডেল স্বর্ণা

সাবেক স্বামীর মামলায় কারাবন্দি মডেল ও অভিনেত্রী রোমানা ইসলাম স্বর্ণাকে নিয়ে নতুন করে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ বলছে, শুধু কামরুল হাসান নয়, তার মতো অনেক প্রবাসী স্বর্ণার প্রতারণার শিকার হয়েছেন। স্বর্ণা গ্রেপ্তার হওয়ার পর দেশ ও দেশের বাইরে থেকে অনেক যুবক প্রতারিত হয়েছেন জানিয়ে অভিযোগ দিচ্ছেন।

তেজগাঁও বিভাগের ডিসি হারুণ অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, শুধু সৌদি প্রবাসী কামরুল নয়, তার প্রতারণার শিকার হয়েছেন আরো অনেকে। অনেক প্রবাসী থানায় ও আমাদের মোবাইলে ফোন করে মডেল স্বর্ণার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন।

‘অভিযোগগুলো আসলে আমরা সঠিকভাবে বলতে পারব তার কয়টি বিয়ে হয়েছিল। তবে একাধিক বিয়ে তো তিনি অবশ্যই করেছেন।’ তিনি আরো জানান, ধনী ব্যক্তিদের টার্গেট করে অর্থ হাতিয়ে নেয়াই ছিল রোমানার প্রধান ব্যবসা। প্রাথমিকভাবে তার একাধিক স্বামী থাকার কথা জানা গেছে বলেও জানান ডিসি হারুণ।

ডিসি হারুণ আরো বলেন, আদালত জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিলেও প্রয়োজনে রোমানাকে আবারও রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করা হবে। তিনি বলেন, জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করে যদি সন্তোসজনক কোনো কিছু না পাই,

তাহলে আবার পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে। তা হলে যারা অভিযোগ করেছেন তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারব। স্বর্ণার অ্যাকাউন্টে কারা টাকা পাঠিয়েছেন তাও জানতে পারব। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায় স্বর্ণাকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কামরুলের টাকায় কেনা গাড়ি দেখতে তাকে একদিন বাসায় ডাকেন রোমানা। এরপর ব্ল্যাকমেইলের উদ্দেশ্যে আপ্যায়নের নামে দেয়া খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে উলঙ্গ ও অর্ধ-উলঙ্গ ছবি তুলে রোমানা ও তার পরিবারের সদস্যরা।

এরপর ধর্ষণ মামলার হুমকি ও সামাজিক মর্যাদা নষ্টের ভয় দেখিয়ে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয় প্রবাসী কামরুলকে। স্ট্যাম্পে নেয়া হয় স্বাক্ষর। নিকাহনামায় নিজেকে বিধবা হিসেবে উল্লেখ করেন রোমানা।

ভুক্তভোগী কামরুল জানান, বিয়ের পর তার জীবনটা বিষিয়ে ওঠে। ১০ লাখ টাকা দেনমোহরের পাশাপাশি নেয়া হয় ৩৩ ভরি স্বর্ণ। এরপর তার চাহিদা বাড়তেই থাকে। কেনেন চার লাখ টাকা মূল্যের একটি ঘড়ি, দুটি নতুন মডেলের আইফোনসহ বিভিন্ন পণ্য।

তিনি আরো জানান, ২০১৯ সালের মার্চে বিয়ে করেন তারা। বিয়ের পর কামরুল সৌদি আরব চলে যান। সম্প্রতি তিনি দেশে আসেন। স্বর্ণাকে ফোন করলে রিসিভ করছিলেন না স্বর্ণা।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টার দিকে স্বর্ণার বাসায় যান তিনি। তখন সে বাসায় ফেরেনি। রাত ২টা ৪০ মিনিটে বাসায় ফিরলে স্বর্ণা জানিয়ে দেয়, তাকে অনেক আগেই সে তালাক দিয়েছে। এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে হত্যার হুমকি দেয়া হয় তাকে। এর আগে রোমানার আরো দুটি বিয়ে হয়েছে বলে জানান কামরুল।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার স্বর্ণার বিরুদ্ধে কামরুল মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। সন্ধ্যায় লালমাটিয়া ডি-ব্লক-এর একটি বাসা থেকে স্বর্ণাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সূত্রঃ বাংলাদেশ জার্নাল